বিশ্বে প্রতি বছর হৃদরোগজনিত কারণে প্রায় দেড় কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন, যা উন্নত বিশ্বের মোট মৃত্যুর প্রায় শতকরা ৪৫ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রায় শতকরা ২৫।
মূলত অজ্ঞানতা এবং অসচেতনতা হৃদরোগের জন্য দায়ী, হৃদরোগ হওয়ার কারণগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে এটা বোঝা যায়, আমরা যদি কিছু নিয়ম মেনে চলি তাহলে কঠিন অসুখ হৃদরোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পেতে পারি। সবারই প্রয়োজন স্বাস্থ্য সচেতনতা।
বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে হলে যখনই স্বল্প বয়সী ছেলে বা মেয়ের গলাব্যথাসহ জ্বর হয় তখন এক সপ্তাহের জন্য তাকে পেনিসিলিন ট্যাবলেট দিয়ে চিকিৎসা করলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ হওয়ার আশংকা অনেকটা কমে যাবে।
এছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব। হৃদপিণ্ডে স্বল্প রক্ত চলাচলজনিত কারণে যে ধরনের সমস্যা হয় সেটা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। একে সাধারণ ভাষায় Heart Attack বলা হয়ে থাকে।
স্বাভাবিক ওজন, সুঠাম গঠন, মেদ ভুঁড়ি বর্জিত স্বাভাবিক গড়ন (লম্বা যত ‘ইঞ্চি, তত ‘কেজি’ ওজন)
ভুঁড়ি এবং তলপেটের চর্বির আধিক্য হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ (পুরুষের কোমরের মাপ ৩৭ ইঞ্চির কম ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩২ ইঞ্চির কম হওয়া উচিত)। বাহুর চামড়ার (হাতের ট্রাইসেপ) পুরুত্ব পুরুষের ২০ মিমি.-এর কম ও মহিলাদের ২৮ মিমি-এর কম হওয়া বাঞ্ছনীয়।
বিএমআই (ওজন যত কিলোগ্রাম হবে, তাকে উচ্চতা যত মিটার তার বর্গ দিয়ে ভাগ করে) দেখতে হবে তা যেন ২৫-এর নিচে থাকে। এটা যত বেশি হবে হৃদরোগের ঝুঁকি তত মারাত্মক।
বেশি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাদ্য বর্জন করতে হবে।
মদ্যপান, সাদা জর্দা, তামাক, ধূমপান বন্ধ করতে হবে (ধূমপান ছাড়ার ১০ বছর পর্যন্ত ঝুঁকি থেকে যায়)।
অতিরিক্ত চা-কফি, ফাস্টফুড টিনজাত ও শুকনো খাবার, কোমলপানীয় বর্জন করতে হবে।
মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, কায়ীক পরিশ্রম কম করাও হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। হৃদরোগ বংশগতও হয়।
অনিদ্রা, টেনশন, ভয়, ক্রোধ, শোক, হতাশা, রাগ, প্রতিশোধ প্রবণতা, হিংসা বিদ্বেষ, অশান্তি, উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় বা চেচাঁমিচি (চিৎকার), অস্থিরতা, ক্ষমা করতে না পারা- এসব মানসিক চাপ বর্জনীয়।
উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়মিত নিয়ন্ত্রিত রাখা (সপ্তাহে এক দিন রক্তচাপ পরীক্ষা, মাসে একবার করে রক্তের সুগার দেখা, তিন মাস পর পর লিপিড প্রফাইল ও ছয় মাস পরপর ইসিজি ও বছরে একবার করে ইটিটি করা উচিত- নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরও)।
রক্তের লিপিড প্রফাইলে সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খাবেন।
ইকোকার্ডিওগ্রাম ডপলার এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে (রিস্ক ফ্যাক্টর ও বুকে ব্যথা থাকলে হৃদরোগজনিত) এনজিওগ্রাম করতে পারেন (অনেকের হৃদপিণ্ডে ব্লক ধরা পড়েছে)।
যাদের বয়স ৪০-এর ওপরে সুষম খাদ্য খাবেন। প্রাণিজ চর্বি (গরু, খাসি, হাঁস, বড় চিংড়ি, ডিমের কুসুম, কলিজা, মগজ, চামড়া, চর্বির টুকরো, ঘি, ডালডা, পনির) খাবেন না, তবে উদ্ভিদ তেল (সয়াবিন, সূর্যমুখী, সরিষার তেল), সামুদ্রিক মাছ খাবেন। বাদাম হৃদরোগের সহায়ক- প্রতি সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ গ্রাম করে (খোসাসহ) খেলে রক্তে ভালো কলস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ে। বাদামের ভেষজ প্রোটিন, ফলিক এসিড, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফ্লাভোনয়েডস, সেলিনিয়াম ও ভিটামিন-ই হৃদরোগের প্রতিরোধক।
প্রতিদিন ৩০ মিনিট মুক্ত বাতাসে ব্যায়াম বা দ্রুত হাঁটা (সহনীয়) খেলাধুলা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, বাগান করা এবং সুযোগ পেলেই হাঁটা হৃদরোগ প্রতিরোধক। মাদকাসক্ত হৃদপিণ্ডের শত্রু।
প্রচুর ফল, শাকসবজি, তরকারি, আদা, মেথি, করলা, রসুন, টক ফল খাবেন, লবণ ও চিনি কম খান, টকদই খাবেন।
অবসর গ্রহণের পর একজন সরকারী কর্মচারী তার প্রাপ্ত পেনশন অনুসারে জীবন যাপন...
গোসল তো আমরা রোজই করি। তবে শুধুমাত্র নিজেকে পরিষ্কার রাখার জন্যই আমরা...
অল্পতেই বুড়িয়ে যাওয়া কেউই পছন্দ করেন না। একটু বয়স বাড়তে না বাড়তেই...
ভালোবাসার সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া জীবনের অন্যতম কষ্টদায়ক ঘটনা। দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার মানসিকতা...
সুস্থ থাকতে যে শুধু পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে তা নয়। সুস্থ থাকতে...
খেজুরকে ন্যাচারাল এনার্জি বল। কারণ মাত্র চারটি খেজুর আপনাকে যে পরিমাণ এনার্জি...
Created with AppPage.net
Similar Apps - visible in preview.