বিষ্ণু হিন্দু বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবতা। আদি শংকর প্রমুখ স্মার্ত পণ্ডিতদের মতে, বিষ্ণু ঈশ্বরের পাঁচটি প্রধান রূপের অন্যতম। আবার তৈত্তিরীয় শাখা ও ভগবদ্গীতা আদি শ্রুতিশাস্ত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
বিষ্ণু সহস্রনামে বিষ্ণুকে পরমাত্মা ও পরমেশ্বর বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই গ্রন্থে তাঁকে সর্ব জীব ও সর্ববস্তুতে পরিব্যাপ্ত সত্ত্বা; অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ তথা অনাদি অনন্ত সময়ের প্রভু; সকল অস্তিত্বের স্রষ্টা ও ধ্বংসকারী; বিশ্বচরাচরের ধারক, পোষক ও শাসক এবং বিশ্বের সকল বস্তুর উৎসপুরুষ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
পুরাণ অনুসারে, বিষ্ণুর গাত্রবর্ণ ঘন মেঘের ন্যায় নীল (ঘনশ্যাম); তিনি চতুর্ভূজ এবং শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্ম ধারী। ভগবদ্গীতা গ্রন্থে বিষ্ণুর বিশ্বরূপেরও বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই রূপের ধারণা বা কল্পনার শক্তি সাধারণ মানুষের নেই।
পুরাণে বিষ্ণুর দশাবতারেরও বর্ণনা রয়েছে। বিষ্ণুর এই দশ প্রধান অবতারের মধ্যে নয় জনের জন্ম অতীতে হয়েছে এবং এক জনের জন্ম ভবিষ্যতে কলিযুগের শেষলগ্নে হবে বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করেন। বিষ্ণু সহস্রনামে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার উক্তিতে বিষ্ণুকে "সহস্রকোটি যুগ ধারিনে" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ, বিষ্ণুর অবতারগণ সকল যুগেই জন্মগ্রহণ করে থাকেন। ভগবদ্গীতা অনুসারে, ধর্মের পালন এবং দুষ্টের দমন ও পাপীর ত্রাণের জন্য বিষ্ণু অবতার গ্রহণ করেন। হিন্দুদের প্রায় সকল শাখাসম্প্রদায়ে, বিষ্ণুকে বিষ্ণু বা রাম, কৃষ্ণ প্রমুখ অবতারের রূপে পূজা করা হয়।
হিন্দুধর্মের ত্রিমূর্তি ধারণায় ব্রহ্মাকে বিশ্বচরাচরের সৃষ্টির প্রতীক, বিষ্ণুকে স্থিতির প্রতীক ও শিবকে ধ্বংসের প্রতীক রূপে কল্পনা করা হয়েছে।ভাগবত পুরাণ মতে, ত্রিমূর্তির এই তিন দেবতার মধ্যে বিষ্ণুর পূজাই সর্বাপেক্ষা অধিক ফলপ্রদ।বিষ্ণু পুরাণ অনুসার ভগবান বিষ্ণুই সর্বোচ্চ ঈশ্বর । ভগবান বিষ্ণু থেকেই ব্রহ্মা এবং শিবের উৎপত্তি ।
বিষ্ণু নয়বার পৃথিবী উদ্ধারের জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং কলিযুগে কল্কি অবতার হয়ে আসবেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এই দশটি অবতার যথাক্রমে মৎস্য, কূর্ম , বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, বলরাম (মতান্তরে কৃষ্ণ), বুদ্ধ এবং কল্কি।
যারা বিষ্ণুর উপাসনা করেন, তাদের বৈষ্ণব বলা হয়। শ্রীচৈতন্য বঙ্গদেশে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তন করেন। সাহিত্য, চিত্রকলা, ভাস্কর্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিষ্ণু সুবিদিত। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন মন্দির ও জাদুঘরে বিষ্ণুর অনেক মূর্তি আছে।
মহামন্ত্র সর্বপ্রথম ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে রচিত কলি-সন্তরণ উপনিষদ্-এ উল্লিখিত হয়; যেটি কৃষ্ণ...
১৯ শতকে যে কয়েকজন ধর্ম মনিষী ছিলেন তাদের মধ্যে শ্রী শ্রী রাম...
পরমপুরুষ শ্রীশ্রীলোকনাথ ব্রহ্মচারী করুণার শিরোমণি। গ্রামে-গঞ্জে বাবার করুণাধারা নিয়ে অনেকেই পথ চলছেন।...
আপনাদের জন্যে এবারে এনেছি জীবনের প্রেরণা মূলক সনাতন ধর্মীয় বাণী । শুধু...
ভগবদ্গীতা (ভগবানের গান ) বা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতা একটি ৭০০-শ্লোকের হিন্দু ধর্মগ্রন্থ।...
ভগবান শিবের মুখারবিন্দ থেকে বের হয়েছে এই শিবগীতা। পদ্মপুরাণে উল্লিখিত শিবরাঘব...
Created with AppPage.net
Similar Apps - visible in preview.